গণঅধিকার নেতাকর্মীদের ‘টোকাই’ বললেন জাপা নেতা
গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের ‘টোকাই’ বলে মন্তব্য করেছেন মহানগর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক মহসিন উল ইসলাম হাবুল।
গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের ‘টোকাই’ বলে মন্তব্য করেছেন মহানগর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক মহসিন উল ইসলাম হাবুল।
দলের জেলা ও মহানগর কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের প্রতিবাদে রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। দুপুরে বরিশাল প্রেসক্লাবে জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টি এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
এ সময় জাতীয় পার্টির বরিশাল জেলা ও মহানগর কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর এবং নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন উপস্থিত নেতারা।
তারা বলেন, “এই ঘটনাটি তারা রাজনৈতিক এবং আইনিভাবে মোকাবিলা করবেন।”
শনিবার বিকালে নগরীর সদর রোড সংলগ্ন ফকিরবাড়ি রোডে জাতীয় পার্টির বিক্ষোভ মিছিলে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের হামলার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ২০ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়।
এ ঘটনার পর রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল শেষে ফকিরবাড়ি রোডে জাতীয় পার্টি কার্যালয়ে হামলা ভাঙচুর করেন গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা। তাছাড়া হামলার অভিযোগ তুলে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নুসহ আড়াইশ’ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন গণঅধিকার পরিষদ বরিশাল মহানগরের সহসভাপতি শহিদুল ইসলাম সাগর।
এ ঘটনার প্রেক্ষিতে রবিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেন জাতীয় পার্টির বরিশাল জেলা ও মহানগরের নেতাকর্মীরা।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির বরিশাল মহানগরের আহ্বায়ক মহসিন উল ইসলাম হাবুল বলেন, “জাতীয় পার্টি একটি গণতান্ত্রিকক দল। অথচ তাদের বারবার আওয়ামী লীগের দোসর প্রমাণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। জাতীয় পার্টি কখনই আওয়ামী লীগের দোসর ছিল না। বরং এখন যারা এনসিপির নেতৃত্ব দিচ্ছে, তারা আগে ছাত্রলীগ ছিল, গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নূরু শেখ হাসিনাকে মা বলে ডেকেছেন। তারাই এখন জাতীয় পার্টিকে আওয়ামী লীগের দোসর বলছে।”
হাবুল বলেন, “কয়েক দিনে বাংলাদেশের রাজনীতিতে যা ঘটে গেল- তা অত্যন্ত দুঃখজনক। ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে বরিশাল জাতীয় পার্টি ছিল। বরিশালের স্বার্থে আমরা একসাথে থেকে লড়াই সংগ্রাম করেছি। রাজনৈতিক দলের মতাদর্শে বিরোধিতা থাকতেই পারে, পার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু গত দুই দিন আগে বরিশালের মাটিতে যে ঘটনা ঘটল- এই ঘটনা কারো কাছেই কাম্য ছিল না।”
তিনি বলেন, “আমরা কোনো অন্যায় করলাম না, তবুও কেন আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা হলো! আমরা প্রশাসনের কাছে বলেছি, নিরপেক্ষ তদন্ত করে এটিকে বের করেন। আমরা এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।”
জাতীয় পার্টির এই বলেন, “গত বৃহস্পতিবার রাতে রংপুরে জিএম কাদেরের বাসায় হামলা হয়েছে। পল্লীবন্ধু এরশাদের বাড়িতে অনেক ঝড়-ঝাপটা গেছে। তারপরও তার বাড়িতে কোনো হামলা হয়নি। আজকে এই গণতান্ত্রিক পরিক্রমায় আমরা যাচ্ছি, ঠিক তখনই এরশাদের বাড়িতে হামলা হলো। কারা হামলা করল তা আমরা প্রশাসনের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। যারা হামলা করেছে।”
তিনি বলেন, “সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে শুক্রবার বিকালে জাতীয় পার্টি বরিশাল জেলা ও মহানগর বিক্ষোভ করেছে। বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে নগরীর সদর রোডে যাওয়ার পথে আমাদের পেছন থেকে দুর্বৃত্তরা হামলা করে। হামলার কারণে আমাদের জাতীয় পার্টির অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আমরা যখন তাদের প্রতিহত করতে যাই, তখন তারা বিভিন্ন দিকে দৌড়ে পালিয়ে যায়। তখন আমরা তাদের চিহ্নিত করতে পারি নাই। কিন্তু গত দুই দিনে আমরা ঘটনাটি পর্যবেক্ষণ করেছি। গণঅধিকার পরিষদের কিছু টোকাই আমাদের ওপর হামলা করেছে। আবার শুনছি, আমাদের ওপর হামলা করে তারাই আবার আমাদের নামে নাকি মামলা করেছে।”
ফ্যাসিবাদ উত্তরণের পর বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে আবার একটি নব্য ফ্যাসিবাদের জন্ম হয়েছে। আওয়ামী ফ্যাসিবাদের চেয়েও ভয়ানক একটি ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বাংলাদেশের রাজনীতিতে আবির্ভাব হচ্ছে। তারাই এই কাজগুলো করছে বলে মন্তব্য করেন জাতীয় পার্টির এই নেতা।
তিনি বলেন, “আমরা তাদের এই কর্মকাণ্ড রাজনৈতিক এবং আইনিভাবে লড়াই করব। জাতীয় পার্টি কার্যালয়ে ন্যাক্কারজনক হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় পার্টি অফিসে ১০ লাখ টাকার মালামাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ঘটনায় আমরা ফৌজদারি আইনে মামলা করব।