• ৮ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৪শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

২০০ বিলিয়ন ডলার আফ্রিকায় দান করবেন বিল গেটস

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত জুন ৪, ২০২৫, ১২:১৩ অপরাহ্ণ
২০০ বিলিয়ন ডলার আফ্রিকায় দান করবেন বিল গেটস
সংবাদটি শেয়ার করুন....

২০০ বিলিয়ন ডলার আফ্রিকায় দান করবেন বিল গেটস

আগেই নিজের ৯৯ শতাংশ সম্পদ দান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস। এবার তিনি জানালেন, তার এই বিপুল সম্পদের বড় একটি অংশ আগামী ২০ বছরের মধ্যে ব্যয় করা হবে আফ্রিকার স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে উন্নয়নের জন্য।
বিজ্ঞাপন

৬৯ বছর বয়সী গেটস ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবায় আফ্রিকান ইউনিয়নের সদর দপ্তরে এক ভাষণে বলেন, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মাধ্যমে মানুষের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে আফ্রিকার প্রতিটি দেশকে একটি সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আগামী দুই দশকে তার দান করা অর্থের বেশির ভাগই আফ্রিকার স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ব্যয় করা হবে। একই সঙ্গে তরুণ উদ্ভাবকদের প্রতি আহ্বান জানান, তারা যেন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে স্বাস্থ্যসেবায় নতুন সমাধান নিয়ে আসে।

গত মাসে নিজের সম্পদের ৯৯ শতাংশ দান করার ঘোষণার সময় বিল গেটস বলেছিলেন, তার আশা ২০৪৫ সালের মধ্যে তার দানের পরিমাণ ২০০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে এবং ওই সময় গেটস ফাউন্ডেশনের কার্যক্রমও ধাপে ধাপে বন্ধ করে দেওয়া হবে।
আফ্রিকার দুজন দরিদ্র নারীর সঙ্গে বিল গেটস। ছবি: সংগৃহীত

গেটস বলেন, সম্প্রতি আমি প্রতিজ্ঞা করেছি, আগামী ২০ বছরে আমার সম্পদের অধিকাংশই দান করব। এই তহবিল আফ্রিকার মানুষের পাশে দাঁড়াতে ব্যয় করা হবে।

বিল গেটস বলেন, স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে মায়েদের পুষ্টি ও শিশুদের প্রাথমিক বিকাশে। আমরা শিখেছি, মাকে গর্ভধারণের আগেই পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে এবং সুস্থ থাকতে হবে। এতে গর্ভাবস্থায় এবং পরে সন্তানের স্বাস্থ্যে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। শিশুর প্রথম চার বছরে পুষ্টি নিশ্চিত করতে পারলেই ভবিষ্যতে বড় পার্থক্য তৈরি হয়।
বিজ্ঞাপন

বিল গেটস বলেন, মোবাইল ফোন আফ্রিকায় ব্যাংকিং খাতে বিপ্লব এনেছে, এবং এখন সময় এসেছে AI ব্যবহারের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবায় এমনই এক নতুন বিপ্লব ঘটানোর। রুয়ান্ডার উদাহরণ দিয়ে তিনি জানান, সেখানে ইতোমধ্যে AI-চালিত আল্ট্রাসাউন্ড প্রযুক্তির মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভাবস্থা শনাক্ত করা হচ্ছে।

গেটস ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাদের তিনটি মূল অগ্রাধিকার হলো—মা ও শিশুর প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যু প্রতিরোধ করা; শিশুদের সংক্রামক রোগমুক্ত স্বাস্থ্যবানভাবে বড় হয়ে ওঠা নিশ্চিত করা ও লাখ লাখ মানুষকে দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করা

মোজাম্বিকের সাবেক ফার্স্ট লেডি গ্রাসা ম্যাচেল এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, সংকটের এই মুহূর্তে এমন ঘোষণা আশার আলো দেখায়। তিনি গেটসের প্রতিশ্রুতিকে ‘রূপান্তরের পথে অটল প্রতিশ্রুতি’ বলে আখ্যা দেন।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির আওতায় আফ্রিকায় এইচআইভি/এইডসসহ বিভিন্ন সহায়তা কর্মসূচি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই মহাদেশে স্বাস্থ্যসেবার ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ে। এ অবস্থায় বিল গেটসের এই ঘোষণা নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

নিজের ব্লগে গেটস লেখেন, আমি মারা গেলে মানুষ অনেক কিছু বলবে। তবে আমি নিশ্চিত করতে চাই, কেউ যেন বলতে না পারে—‘তিনি ধনী হয়ে মারা গিয়েছেন।

ব্লুমবার্গের তথ্যমতে, বিশ্বের পঞ্চম শীর্ষ ধনী বিল গেটস তার সম্পদের ৯৯ শতাংশ দান করলেও এখনও বিলিয়নিয়ার হিসেবেই থাকবেন।

১৯৭৫ সালে পল অ্যালেনের সঙ্গে মিলে মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠা করেছিলেন গেটস। এরপর কোম্পানিটি বিশ্বের অন্যতম প্রযুক্তি শক্তি হয়ে ওঠে। সময়ের সঙ্গে গেটস কোম্পানির দায়িত্ব থেকে ধীরে ধীরে সরে দাঁড়ান—২০০০ সালে সিইও পদ থেকে এবং ২০১৪ সালে চেয়ারম্যান পদ থেকে সরে যান।

তিনি জানান, ওয়ারেন বাফেটসহ অন্যান্য দানশীল ব্যক্তিদের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েছেন তিনি। তবে তার ফাউন্ডেশনের সমালোচকরা বলছেন, গেটস দাতব্য কাজের মাধ্যমে কর সুবিধা নিচ্ছেন এবং বিশ্ব স্বাস্থ্যনীতিতে তার প্রভাব প্রশ্নবি