• ৮ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২৪শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঈদের ৯ দিনে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কে ৮ দুর্ঘটনা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত জুন ১৮, ২০২৫, ১৪:২২ অপরাহ্ণ
ঈদের ৯ দিনে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কে ৮ দুর্ঘটনা
সংবাদটি শেয়ার করুন....

ঈদের ৯ দিনে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কে ৮ দুর্ঘটনা
এতে প্রাণ হারিয়েছেন ৩ জন এবং আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন।

বরিশাল প্রতিনিধি,

বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের গৌরনদী থেকে বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদ পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার সড়ক এখন ভয়ংকর দুর্ঘটনাপ্রবণ হয়ে উঠেছে।

ঈদ উল আজহার ছুটিতে মাত্র ৯ দিনের মধ্যে এই রাস্তায় ঘটেছে ৮টি বড় সড়ক দুর্ঘটনা। এতে প্রাণ হারিয়েছেন ৩ জন এবং আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন মানুষ।

হাইওয়ে পুলিশ ও বিআরটিএ বলছে, সরু রাস্তা, অদক্ষ চালক, বেপরোয়া গতি আর অবৈধ যানবাহনের কারণেই এমন দুর্ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে ঈদের সময় বিভিন্ন রুটে বৈধ-অবৈধ অনেক পরিবহন চলাচল করে। তারা আগে যাওয়ার প্রতিযোগিতায় ঝুঁকি নেয়, যার ফলে দুর্ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, পদ্মা সেতু চালুর পর এই রুটে যানবাহনের চাপ অনেক বেড়ে গেছে। কিন্তু রাস্তা আগের মতোই সরু রয়ে গেছে। ফলে বড় গাড়ি, বাস-ট্রাক, থ্রি-হুইলার, নছিমন-করিমন একসাথে চলতে গিয়ে ঘটছে দুর্ঘটনা।

সড়ক বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গৌরনদী থেকে নথুল্লাবাদ পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার রাস্তায় ৩০টি স্থানকে দুর্ঘটনাপ্রবণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে মাহিলারা, ভুরঘাটা, গৌরনদী, তারাকুপি, জয়শ্রী, সোনার বাংলা স্কুল মোড়সহ অনেক জায়গায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে।

সড়কে চলার সময় গাড়িগুলোর সর্বোচ্চ গতিসীমা ৬০ কিলোমিটার বেঁধে দেওয়া থাকলেও বাস্তবে অনেক গাড়ি চলে ৮০ কিমি বা তার বেশি গতিতে। মোড়ে গাছপালা থাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা গাড়ি দেখা যায় না। এই কারণেও অনেক দুর্ঘটনা ঘটছে।

চালকরা একে অপরকে দোষ দিচ্ছেন। বাস চালকরা বলছেন, রাস্তায় থ্রি-হুইলার ও ছোট যানবাহন চলায় বড় গাড়ি চালাতে সমস্যা হয়। আবার থ্রি-হুইলারের চালকরা বলছেন, বড় গাড়িগুলো বেপরোয়া গতিতে চলে, কোনো নিয়ম মানে না।

যাত্রীরাও বলছেন, দুই পক্ষই দায়ী। রাস্তায় ছোট বড় সব গাড়ি যখন একসাথে চলে, তখন ওভারটেক করতে গিয়ে ঝুঁকি তৈরি হয়। সামান্য ভুল হলেই ঘটে বড় দুর্ঘটনা।

কয়েক দিনে যেসব দুর্ঘটনা ঘটেছে, তার মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ছিল ভুরঘাটা এলাকায়, যেখানে বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে এক মোটরসাইকেল আরোহী মারা যান। ঈদের দিন জয়শ্রী এলাকায় বাস চাপায় নিহত হয় এক কলেজ ছাত্র। এছাড়াও মাহিলাড়ায় বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে আহত হয় ৩০ জন।

বিআরটিএর বরিশাল অফিস প্রধান জানান, এই মহাসড়ক খুব সরু। রাস্তা প্রশস্ত না করা হলে দুর্ঘটনা কমবে না। হাইওয়ে থানার ওসি জানান, তারা নিয়মিত গাড়ির লাইসেন্স, ফিটনেস, কাগজপত্র পরীক্ষা করছেন। কিন্তু চালকরা সচেতন না হলে দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব নয়।